শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২০ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধি:ভালো কাজ কিংবা সৎ উদ্যোগের জন্য পেশাগত পরিচয় কখনোই মুখ্য বিষয় হতে পারে না। এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে। যখনই আমরা পুলিশ সম্পর্কে চিন্তাকরি, তখন কঠিন ও কঠোর মানুষের একটি সাধারণ চিত্র ফুটে উঠে। কিন্তু এই রূপ তাতো সামাজিক নিরাপত্তার জন্যই। এই পুলিশের পেশা যে মানুষের সেবার জন্য সেটা অনেক ক্ষেত্রেই আমরা অনুভব করতে পারি না।
তবে কেউ কেউ পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। কেবল কঠোরতাই নয়, অবহেলিত আর নিগৃহীত জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়িয়ে সবার ধারণা পালটে দিয়েছেন একজন মহৎ হৃদয় পুলিশ অফিসার। তিনি ঝালকাঠি জেলা পুলিশে কর্মরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল এম এম মাহমুদ হাসান (পিপিএম-সেবা বার)। যিনি মানবসেবায় নিজেকে ব্রতী করেছেন। এছাড়াও তিনি বলেন, মানুষের কল্যাণে কাজ করে নিজেকে উদ্সর্গ করেন।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম এম মাহামুদ হাসান চাকরিতে যোগদানের পর থেকেই নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। ঝালকাঠিতে যোগদানের পর বিট পুলিশিং, কমিউনিটি পুলিশিং ও স্টুডেন্ট কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমে দক্ষতা ও সাফল্যে দেখিয়েছেন। এজন্য বরিশাল রেঞ্জের শ্রেষ্ঠ সার্কেল অফিসার নির্বাচিত হয়েছেন।
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মগড় ইউনিয়নের বিমল জানান, দীর্ঘ ৪০ বছর যাবৎ স্থানীয় এক মুসলিম পরিবারে সাথে আমাদের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল বিরোধ নিস্পত্তির জন্য ঝালকাঠির আদালত থেকে শুরু করে হাইকোর্ট পর্যন্ত ঘুরেও কোন সুরাহা করতে পারিনি। অবশেষে ঝালকাঠি সদর সার্কেল অফিস মাহমুদ স্যারের কাছে যাই। তিনি আমাদের আইনি সহায়তা দিয়ে ওই মুসলিম পরিবারে সাথে সান্তিপুর্ন সুরাহা করে দেন। আমরা বর্তমানে শান্তিতে বসবাস করতে আছি। আমাদের মাহমুদ স্যার নি:স্বার্থ ভাবে অনেক পরিশ্রম করে সুরাহা দেওয়ায় আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ। তারা আরো বলেন, মাহমুদ স্যারের মত লোক প্রতিটি জেলায় থাকলে হিন্দু-মুসলমান বিরোধ তো দুরের কথা দেশটা শান্তির স্বর্গরাজ্য হবে।
নলছিটি উপজেলার সুবিদপুর গ্রামের কামরুল ইসলাম জানান, আমাদের পারিবারিক জমি জমা নিয়ে স্বাধীনতার পর থেকেই বিরোধ চলে আসছিল, এরই জের ধরে অনেক বার রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষ সহ অনেক মামলা হামলা হয়েছে কিন্তু কোন সুরাহা পাইনি। আমরা সৎ পুলিশ অফিসার মাহমুদ স্যারের কথা শুনে তার শরণাপন্ন হই, তিনি আমাদের আইনি সহায়তা ও শান্তিপূর্ন ভাবে বিরোধ নিস্পত্তির আস্বস্ত করেন। এরপর আমাদের উভয় পক্ষকে নিয়ে একাধিক বার বৈঠক করে স্থানীয়দের নিয়ে শান্তিপূর্ন সমাধান করে দেন। আমার এখন একই পরিবারে মত শান্তিতে বসবার করিতেছি। আমরা মাহমুদ স্যারে জন্যই এই শান্তি ফিরে পেয়েছি।
ঝালকাঠি পৌর এলাকার বিকনার এক সম্রান্ত পরিবারের করুন কাহিনির স্বিকার হওয়া তিন্নি আক্তার অশ্রুঝরা কন্ঠে জানান, এক ভন্ড ওঝার খপ্পরে পড়ে পিতা মাতা আত্মীয় স্বজন সহ পরিবারের সহায় সম্বল সব হারিয়েছি ঐ ভন্ড ওঝা কথিত আসাদ সব আত্মসাধ করেছে এমনকি আমার ইজ্জত টুকু লুটে নেয় ঐ ওঝা। এরপরে রাতের আধারে ঝালকাঠি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছি। দীর্ঘ দিন পালিয়ে ঐ ভন্ড ওঝার কাহিনি অনেককে শুনিয়েছি কেউ আমার কথা বিশ্বাস করেনি। প্রায় তিন বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে নানা নির্যাতনের স্বীকার হয়েছি। তারপর সন্ধান পাই শান্তির অগ্রদূত নামে ঝালকাঠি সদর সার্কেল মাহমুদ স্যারের। স্যারের কাছে সব খুলে বলি স্যার আমার কথা শুনে ঐ ভন্ড ওঝাকে ডেকে আনলে স্যারের কাছে সব স্বীকার করে। এরপর আমার পরিবারের হাতিয়ে নেওয়া অর্থ থেকে ২০লক্ষ টাকা তুলে দিয়ে স্যার আমাকে নুতন করে বাচার জন্য জীবন দান করেন। স্যারের এই উপকার আমিও আমার পরিবার কোন দিন ভুলবোনা আল্লাহর পরে আমাদের কাছে যদি কেউ থাকে সে হচ্ছে এডিশনাল এসপি মাহমুদ স্যার।
ঝালকাঠির সদর উপজেলার বাসন্ডা ইউনিয়নের সৎ ছেলের হাতে পঙ্গু হওয়া মিনারা বেগম কান্না জ্বরিত কন্ঠে বলেন, আমার সৎ ছেলে আমার হাত খানা কেটে নিয়ে যায়। আমি বিচার পাওয়া তো দুরের কথা চিকিৎসা পযন্ত করাতে পারিনি। মাহমুদ স্যার আমাকে সু-বিচার পাইয়ে দেন। এমনকি আমার চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা করেন। সর্ব শেষ আমার মাথা গোঁজার মত একটি বসত ঘর ছিলোনা সেই ঘরটিরও ব্যবস্থা করে দেন। মাহমুদ সার আমার কাছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ লোক।
এরকমের শত শত লোকের কান্না থামিয়ে মুখে হাসি ফুটিয়েছেন সৎ দক্ষ জনতার পুলিশ কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম এম মাহমুদ হাসান পিপি এম বার। ঝালকাঠির জেলার কোটিপতি থেকে ভিখারি পর্যন্ত জনতার আস্থার প্রতিক হয়ে উঠেছেন এ পুলিশ কর্তা। সকাল শ্রেনির জনতার জন্য সমান চোখে সব সময় আইনি ও পুলিশি সেবায় তিনি নিষ্ঠাবান ও সততার পরিচয় দিয়েছেন।
কৃতি এই পুলিশ কর্মকর্তারা ঝালকাঠিতে মাদকবিরোধী অভিযানেও ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন। তাঁরা বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় বিরোধ নিস্পত্তি করে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন। তাঁরা ঝালকাঠি জেলার অসংখ্য মানুষের হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করেন। প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া টাকা উদ্ধার করে ফেরত দিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থদের। সিসিটিভি স্থাপন করে শহরকে নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় এনেছেন। কমেছে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই।
তার দক্ষতায় বেড়েছে পুলিশের কর্মক্ষমতা। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে পাশে দাঁড়িয়েছেন সাধারণ মানুষের। নানা সামাজিক কর্মকান্ডে তাকে দেখা যায় অগ্রভাগে। ঝালকাঠি জেলা উল্লেখযোগ্য চাঞ্চল্যকার ঘটনার বিষয়ে এ পুলিশ কর্তার অবদান রয়েছে অসমতুল্য। আদলাতে বছরের পর বছর ঘুরে কোন আইনী সুরাহা না পাওয়া শত শত লোকের সমস্যায় নিজেকে উজর করে তাদের বিরোধ নিস্পত্তি করে দৃষ্টান্ত করেছেন এ দক্ষ পুলিশ কর্তা। এমনকি দীর্ঘ ৩৫ বছরের থেকে শুরু করে হিন্দু মুসলিম বিরোধও নিস্পত্তি করে ঝালকাঠির জনতার পুলিশ অফিসার হিসাবে মানুষের কাছে পরিচিতি পেয়েছেন তিনি।
তার একাজের জন্য প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল (পিপিএম) সেবা পদকে ভূষিত হয়েছেন। পরপর দুইবারেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে এ পদক প্রদান করেন।
পুলিশের কাজে অধিকতর শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা এসেছে। নিজের পেশাগত জায়গায় তিনি যেমন সফল মানুষ, তেমনি পেশার বাইরে ক্রীড়া সংগঠক ও সমাজের চেঞ্জ মেকার হিসেবে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। স্বপ্নের সমৃদ্ধময় বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএম মাহমুদ হাসানের মতো স্বপ্নচারী মানুষগুলো সত্যিকার অর্থেই মাইলফলক হয়ে উঠবেন।
পটুয়াখালী জেলার ধুমকি উপজেলার অদর্শবান স্কুল শিক্ষরের ছেলে ও রত্নাগর্ভা মায়ের সন্তান এমএম মাহমুদ হাসান।
এব্যপারে ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএম মাহমুদ হাসার পিপি এম বার বলেন, জনতাকে আইনি ও পুলিশি সেবা দেওয়া আমার কর্তব্য। মানুষের কল্যানে আমি নিজেকে নিঃস্বার্থ ভাবে বিলিয়ে দিতে চাই,মানুষ যাতে পুলিশের প্রতি শত ভাগ আস্থা নিতে পারে।
Leave a Reply